সর্বশেষ

Sunday, December 7, 2025

জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে কোরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে

জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে কোরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে


মাহমুদ আল হাছান তিস্তা নিউজ ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্জন করে সংসদে গেলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করবে। মুসলিম-অমুসলিম, নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে শান্তির দেশ কায়েম করবে। কোরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে।

রোববার দুপুরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনে ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ৫৪ বছরে ধর্ম নিরপেক্ষতা-বাদ, জাতীয়তাবাদ অথবা সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা নৌকা দেখেছি, ধানের শীষ দেখেছি, লাঙ্গল দেখেছি তারা তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। কিন্তু দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি।

কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর এ টি এম আজহারুল ইসলাম আরো বলেন, জামায়াতে ইসলাম একক ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় না। আমরা জনগণের সাথে নিয়ে জনগণের শাসন কায়েম করতে চাই। আমরা ৮ টি ইসলামী দেশপ্রেমিক দল একত্রিত হয়ে আগামী নির্বাচনে এক বাক্সে ভোট দেয়ার চেষ্টা করছি। চেষ্টা সফল হলে। জনগণ যেভাবে আমাদের পাশে এগিয়ে এসেছে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশের সংসদ ও ইসলামী সরকার কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।


তিনি আরও বলেন, এত দিন আমাদের দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। কেউ স্বাধীনতার পক্ষে কাউকে স্বাধীনতার বিরোধী বলা হয়েছে। একটি দেশের নাগরিককে দুভাগে বিভক্ত করে কোনো দেশ বিশে^ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। এ জন্য আমরা নাগরিকরা যে দলেরই হই না কেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। তাই আমরা বিভক্ত না হয়ে সবাই দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করি। দেশকে শান্তির দেশে কায়েম করি।

এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ২৪ সালের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময় দুর্গা পূজার সময় প্রায় মূর্তি ভাঙচুর, আগুন দেয়া, আক্রমণ করা হত। এ সব দায় দায়িত্ব জামায়াত শিবিরের কাঁধে দেয়া হত। কিন্তু দেখেন ২৫ সালে কোন দুর্গা পূজায় আক্রমণ হয়নি, ভাঙচুর হয়নি, আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেনি। দেশের মানুষ বর্তমান আরামদায়ক অবস্থায় আছে। আর যারা মন্দির ভেঙেছে, আগুন দিয়েছে, আক্রমণ করেছে তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুর রশিদ শাহ্’র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ফেরদৌস আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুর রশিদ, জেলা জামায়াতের আমীর ও নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, নীলফামারী-৪ (কিশোরগঞ্জ-সৈয়দপুর) আসনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম, জেলা নায়েবে আমীর ড. খাইরুল আনাম, উপজেলা নায়েবে আমীর আখতারুজ্জামান বাদল, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মনজুরুল ইসলাম রতন, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি রবিউল ইসলাম, শিব্বির আহমেদ, মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা আফজালুল হক প্রমুখ। উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে অনুষ্ঠানে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৯০ পরিবারকে ১ বান্ডিল করে ঢেউটিন বিতরণ করা হয়

মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া স্থগিত

মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া স্থগিত


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি এই মুহূর্তে পুরোপুরিভাবে নির্ভর করছে মেডিকেল বোর্ডের চূড়ান্ত মতামতের ওপর। দীর্ঘ বিমানযাত্রার ধকল সামলানোর মতো শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের আগ পর্যন্ত তাকে আপাতত না সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শনিবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত ছিল। কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কারিগরি ত্রুটি যেমন সত্য, তেমনি মেডিকেল বোর্ড মনে করছে- এই মুহূর্তে দীর্ঘ বিমানযাত্রা তার জন্য নিরাপদ নয়। এ অবস্থায় তার শারীরিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সেজন্যই বিদেশে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। তবে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার বিমানযাত্রায় হাইঅল্টিটিউডে (অতি উচ্চতায়) শরীরে যে পরিবর্তন হয়, তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না। তাই মেডিকেল বোর্ড মনে করছে, নিরাপদে স্থানান্তর করার মতো শারীরিক পরিস্থিতি নিশ্চিত হলেই তাকে বিদেশে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও হয়তো শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে কখন তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া যাবে অথবা নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা প্রস্তুত থাকলেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং তার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অর্থাৎ চিকিৎসাগত দিক থেকে এটিই সবখানে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের যারা যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, বাংলাদেশ ও চীন থেকে অংশ নিচ্ছেন- সবাই কিন্তু তার ফিজিক্যাল কন্ডিশন বা শারীরিক অবস্থার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীনের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড কাজ করছে। চিকিৎসার সার্বিক সমন্বয়ের জন্য ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকায় এসেছেন এবং মেডিকেল বোর্ডের প্রতিটি বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছেন এবং চিকিৎসকদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, দয়া করে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। দেশনেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ সঠিক তথ্যের বাইরে কিছু প্রচার করবেন না।

এছাড়া হাসপাতালে নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে অন্য রোগী ও তাদের স্বজনদের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

ডা. জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমরা আশাবাদী, সবার দোয়া ও আল্লাহর রহমতে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। চিকিৎসকরা যখনই সবুজ সংকেত দেবেন, তখনই তাকে নেওয়া হবে।

৭৯ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ২০২০ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দলের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি সরাসরি অংশ নেননি। এর মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়।

গত শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান। দেশে ফিরেই চিকিৎসকদের সঙ্গে শাশুড়ির চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করছেন তিনি।

এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে লন্ডনে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে কিছুদিন চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।


সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ।


Saturday, December 6, 2025

বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে এখনো সমঝোতার সুযোগ দেখছে এনসিপি

বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে এখনো সমঝোতার সুযোগ দেখছে এনসিপি

তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগপর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার সুযোগ আছে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও আসন সমঝোতার সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা। তবে কারও সঙ্গে শেষ পর্যন্ত এনসিপির আসন সমঝোতা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৭২টিতে ইতিমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে এনসিপির সঙ্গে আসন সমঝোতার আর কোনো সুযোগ আছে কি না, এই প্রশ্ন সামনে এসেছে। কারণ, এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতার সম্ভাব্য নির্বাচনী আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ওই আসনগুলোতে জামায়াতে ইসলামী আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি জোট বা আসন সমঝোতা নিয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনাও চলবে।

এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতার সম্ভাব্য নির্বাচনী আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ওই আসনগুলোতে জামায়াতে ইসলামী আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বাড্ডা, ভাটারা, রামপুরা, হাতিরঝিল থানা (একাংশ) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-১১ এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছেন।


এ ছাড়া এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঢাকা–১৮, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ঢাকা-৯ আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।


এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের দুজন নেতার নির্বাচনী আসনে প্রথমে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। গত ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। তখন ঢাকা-৯ ও ঢাকা-১৮ আসনে প্রার্থী দেয়নি দলটি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দফায় যে ৩৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি, সেখানে ওই দুটি আসনও রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির সমঝোতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে বলেও অনেকে মনে করছেন। যদিও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অনেকে এখনো মনে করেন, সমঝোতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগপর্যন্ত অনেক কিছু ঘটতে পারে।

জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা নির্বাচনী জোট করার বিষয়টিও আলোচনায় আছে। গত ১০ অক্টোবর এনসিপির নির্বাহী কাউন্সিলের এক সভায় নেতাদের একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিল। দলের ওই অংশ এখনো একই অবস্থানে আছে।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গেও এনসিপির অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। তাদের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় যাওয়ার লাভ–ক্ষতির বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন এনসিপির নীতিনির্ধারকেরা।


এ ছাড়া গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে বিএনপি–জামায়াতের বাইরে এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও গণ অধিকার পরিষদের সমন্বয়ে একটি নির্বাচনী জোটের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছিল এনসিপি। গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে এই জোটের আত্মপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। এর আগের দিন গভীর রাত পর্যন্ত ওই চার দলের নেতারা বৈঠক করেছিলেন।

বিএনপির সঙ্গে এনসিপির সমঝোতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে বলেও অনেকে মনে করছেন। যদিও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অনেকে এখনো মনে করেন, সমঝোতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগপর্যন্ত অনেক কিছু ঘটতে পারে।

ওই বৈঠকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের একাংশের উদ্যোগে গঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আপ বাংলাদেশকে (ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ) প্রস্তাবিত এই নির্বাচনী জোটে রাখার প্রস্তাব দেয় একটি দল। এর বিরোধিতা করেন এনসিপির নেতারা। অন্যদিকে এই জোটে আসা নিয়ে গণ অধিকার পরিষদে মতভেদ দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত জোট করার বিষয়টি আর এগোয়নি।


প্রস্তাবিত জোট শেষ পর্যন্ত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে দুটি দলের দুজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে গতকাল শুক্রবার বিকেলে পৃথকভাবে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেন, জোট না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এককভাবে নির্বাচন নাকি বড় কোনো দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা, কোন পথে এগোচ্ছে এনসিপি—এমন প্রশ্নে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী দু–তিন দিনের মধ্যে ৩০০ আসনে আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি রাখছি। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগপর্যন্ত বিভিন্ন দলের আসন সমঝোতার সম্ভাবনাও আছে।’

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো।

Friday, December 5, 2025

তফসিল ঘোষণা ১১ ডিসেম্বর, ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি

তফসিল ঘোষণা ১১ ডিসেম্বর, ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। ওইদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরউদ্দিন এই ঘোষণা দেবেন। বহুল প্রত্যাশিত এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। রোববার কমিশনের সভায় এসব বিষয় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

তফসিলের আগে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের আগে কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে থাকে। রাষ্ট্রপতি ছাড়াও তফসিলের আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে নাসিরউদ্দিন কমিশন। আগের দিন ৯ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ চেয়ে ইসি চিঠি দেয়। আগামী ১০ অথবা ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণার জন্য তার ভাষণের খসড়া তৈরি করেছেন। তার ভাষণে মুক্তিযুদ্ধ থেকে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের চিত্র তুলে ধরবেন। দেশবাসীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বানসহ উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছে সার্বিক সহযোগিতা চাইবেন।


নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আমার দেশকে বলেন, তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেবেন সিইসি ও কমিশনাররা। তফসিল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।


ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তফসিল উপলক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের রেকর্ডকৃত ভাষণ সম্প্রচার করা হবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ওইদিন রাতেই (১০ ডিসেম্বর) বা পরদিন সকালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির লিখিত ভাষণটি রেকর্ড হতে পারে। এর জন্য রাষ্ট্রীয় দুটি সম্প্রচার মাধ্যমকে আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি দেওয়া হবে। রেকর্ডকৃত ভাষণটি ১১ ডিসেম্বর বিকেলে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে।


সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।


জানা গেছে, তফসিল থেকে ভোট গ্রহণের সময়ের মধ্যে দুই মাসের মতো বিরতি রাখা হতে পারে। ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ হতে পারে ৮ ফেব্রুয়ারি, রোববার।


ইসির কর্মকর্তারা জানান, তফসিল থেকে ভোট গ্রহণের আদর্শ সময় ৪২ থেকে ৪৫ দিন। তবে, বিভিন্ন কারণে এই সময় কম বা বেশি হয়ে থাকে। পোস্টাল ভোটসহ নানা কারণে এবার তফসিল ও ভোটের দিনের মধ্যে বেশি ব্যবধান রাখা হচ্ছে। এর আগে সর্বনিম্ন ৩৬ দিনের তফসিলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধির সংশোধনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। দুটি ভোট একই সঙ্গে অনুষ্ঠানের জন্য ভোট গ্রহণের সময় প্রায় একঘণ্টা বাড়ানো হবে। আগে সকাল ৮টা থেকে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট হতো। এবার ভোট গ্রহণের শুরুর সময় আধ ঘণ্টা এগিয়ে সকাল সাড়ে ৭টা এবং শেষ সময়ও আধঘণ্টা বাড়িয়ে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করা হতে পারে। রোববারের কমিশন সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।


অবশ্য এর আগে ঢাকায় একটি মক ভোট অনুষ্ঠানের পর নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ভোটের সময় বাড়ানোর কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।


নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, এবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় তিনদিন থেকে বাড়িয়ে ৫ দিন করা হচ্ছে। একইভাবে, মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের সময়ও ৫ দিন করা হচ্ছে।

এদিকে বিগত সময়ে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর পোস্টাল ভোটে আগ্রহী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হলেও এবার তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রবাসী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে। তবে, অন্যদের জন্য পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে আরো পরে। এবারই প্রথম প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের বিধান যুক্ত হয়েছে।


কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, অন্যান্য সময়ে পোস্টাল ব্যালটে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীকগুলো থাকলেও এবার ইসির জাতীয় নির্বাচনের তফসিলভুক্ত সব প্রতীক যুক্ত করেই পোস্টাল ব্যালট তৈরি করা হবে।


জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ পোস্টাল ব্যালট ছাপানোর চিন্তা ইসির থাকলেও এই সংখ্যা কমিয়ে ৫ লাখ করা হচ্ছে। ভোট দানের নিবন্ধনে প্রবাসী ভোটারদের প্রত্যাশিত মাত্রায় সাড়া না পাওয়ায় এ সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে ইসি। বর্তমানে প্রবাসীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান। আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।


নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে তফসিলের একটি খসড়া করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খসড়া সূত্রে জানা যায়, ১১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ২৫ ডিসেম্বর, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর; আপিল ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১-১২ জানুয়ারি এবং প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৩ জানুয়ারি। আর ভোট হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। অবশ্য, প্রতীক বরাদ্দ থেকে ভোট গ্রহণের সময় আরো কিছুটা কমতে পারে। কারণ ১৩ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হলেও ওইদিন থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারে যেতে পারবেন না। নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী ভোট গ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে কোনো প্রচারে প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন না। আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের নির্ভরযোগ্য একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের জন্য বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। এই সংলাপে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের পাশাপাশি ইসির কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের সুপারিশ আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার আঞ্চলিক কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, খুলনাসহ কয়েকটি অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে (পরীক্ষামূলক বা প্রতীকী) দু-একজনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা করার চিন্তা রয়েছে ইসির, যা রোববার কমিশন সভায় চূড়ান্ত হতে পারে।


ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আগামী নির্বাচনে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটার ভোট দেবেন। এসব ভোটারের জন্য ৪২ হাজার ৭৬৬টি ভোটকেন্দ্রে এবং ২ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫টি ভোটকক্ষ স্থাপন করেছে ইসি।

সিইসির ভাষণে যা থাকতে পারে

ইসির দায়িত্বশীল সূত্র মতে, মুক্তিযুদ্ধ থেকে ২০২৪-এর জুলাই যোদ্ধাদের অবদানের কথা সিইসির ভাষণে উঠে আসতে পারে। লিখিত এ ভাষণে আরো থাকতে পারে, নির্বাচনের গুরুত্ব এবং জনগণের ক্ষমতা সম্পর্কে।

ভাষণের মাধ্যমে ভোটার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচনি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চাইতে পারেন সিইসি। এছাড়া তিনি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাতে পারেন। নির্বাচনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইন ও বিধি মোতাবেক সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাতে পারেন তিনি।

ভাষণে সিইসি সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাতে পারেন।


সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ।

Thursday, December 4, 2025

অভিমানে বের হন বাড়ি থেকে, ভুট্টাক্ষেতে মিলল মরদেহ

অভিমানে বের হন বাড়ি থেকে, ভুট্টাক্ষেতে মিলল মরদেহ


মাহমুদ আল হাছান তিস্তা নিউজ ঃ নীলফামারীর ডিমলায় নুর ইসলাম ওরফে কাইয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের চাকদাবাশ গ্রামের বাঁশঝাড় সংলগ্ন একটি ভুট্টাক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

নুর ইসলাম একই ইউনিয়নের ছাতনাই বালাপাড়া গ্রামের মৃত আফছার আলী ওরফে চাটির ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, পরিবারের সদস্যদের ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান নুর ইসলাম এবং কয়েকদিন ধরে বাড়ির বাইরে ছিলেন।

আজ সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে নুর ইসলামের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। 

পরে সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার-ডিমলা সার্কেল) নিয়াজ মেহেদী ও ডিমলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নুর ইসলামকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী বলেন, ঘটনাটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রাথমিকের আন্দোলনরত ৪২ শিক্ষক নেতাকে অন্য জেলায় বদলি

প্রাথমিকের আন্দোলনরত ৪২ শিক্ষক নেতাকে অন্য জেলায় বদলি

তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ তিন দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। এরমধ্যে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় ৪ শিক্ষক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তাদেরকে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

এদিকে, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ৫ নেতাসহ ৪২ সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক আদেশে মন্ত্রণালয় এই বদলির অনুমতি দিয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক স্মারকে পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বদলির অনুমোদন প্রদান করা হল।

এদিকে বদলির এই তালিকায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ৫ জন নেতার নাম রয়েছে। তারা হলেন- প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি; বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদ; বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কাশেম, প্রাথমিক শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক ও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাহবুবার রহমান এবং কিশোরগঞ্জ মিঠামইন ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মো. মনিরুজ্জামান।

আদেশে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকদের প্রত্যেককে পাশের জেলায় বদলি করা হয়েছে। ফলে নিজের কর্মস্থলের জেলায় থাকতে পারবেন না এসব শিক্ষকরা।

এর আগে অধিদপ্তর থেকে এক অফিস আদেশে বলা হয়, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর দ. চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মো. শামছুদ্দীন মাসুদকে বিদ্যমান শূন্য পদে প্রশাসনিক কারণে নিজ বেতনস্কেলে নির্দেশক্রমে বদলি করা হল। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে বলে অফিস আদেশে বলা হয়।

খালেদা জিয়াকে নিতে ঢাকায় আসছেন জোবাইদা রহমান

খালেদা জিয়াকে নিতে ঢাকায় আসছেন জোবাইদা রহমান


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন থেকে রওনা হবেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র এ কথা জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর জোবাইদা রহমান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে নিয়ে লন্ডন যাত্রা করবেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার কাতার জানিয়েছে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেশটি প্রস্তুত রয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের সব মসজিদে দোয়ার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সবশেষ বুধবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি গত ২৪ ঘণ্টায় এবং তার এ অবস্থাকে স্থিতিশীল মনে করছেন চিকিৎসকরা।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সহায়তায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল ঢাকায় পৌঁছে চিকিৎসক দলের সাথে যুক্ত হয়েছেন।

নভেম্বরের ২৩ তারিখে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে 'সংকটাপন্ন' অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া।

সবশেষ কিডনি, হৃদরোগ এবং নতুন করে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।