সর্বশেষ

Thursday, November 27, 2025

যে কারণে ভেস্তে গেল নতুন জোট গঠন

যে কারণে ভেস্তে গেল নতুন জোট গঠন

 

তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোট গঠনের আভাস দিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংগঠকদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জোটের রাজনীতিতে যাচ্ছেএমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এসব আলোচনার মধ্যেই এনসিপি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) নিয়ে নতুন জোটের গুঞ্জন দেখা দিয়েছিল। তবে তাদের মধ্যকার বৈঠক শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে।এনসিপির সমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আলোচনায় আপ বাংলাদেশকে জোটে নিতে দলের একাংশ রাজি হয়নি। ফলে আপ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বৈঠকে পাস করা যায়নি এবং আপাতত জোট আলোচনা স্থগিত হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, ‘গতকাল রাতের বৈঠকে এনসিপির কয়েকজন নেতা আপ বাংলাদেশকে নিয়ে জোট করতে চাননি। শেষে এনসিপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ বাংলাদেশকে নিয়ে জোট করবে না। এখন জোট সম্ভাবনার অন্য দল যদি বলে তারা আপ বাংলাদেশ ছাড়া জোট করবে না তাহলে তো জোট অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। এজন্য আলোচনা চলছে। আপাতত আজকের বৈঠক হচ্ছে না।’

ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘জোটগঠন প্রক্রিয়া পিছিয়েছে। আলাপ-আলোচনা চলছে। কনফার্ম হলে জানাতে পারবো।’

এনসিপি আপ বাংলাদেশকে নিয়ে জোট করতে চায় না—এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কিছু জানানো হয়নি এনসিপির পক্ষ থেকে।’

এবি পার্টির সহ দপ্তর সম্পাদক মশিউর রহমান মিলু বলেন, ‘বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। আমরা পরবর্তীতে জানিয়ে দেবো। এটা হঠাৎ করে মাঝরাতে স্থগিত হয়েছে। আমাদের শরিক যারা, তাদের ভিতরে ডিসকাশনের কিছু বিষয় আছে। এনসিপির অনেক জুনিয়র নেতারা আছে, বোঝার জায়গা আছে, এই জায়গা থেকে আমরা একটু দেরি করছি।’ 



৩ মামলায় হাসিনার ২১ বছর কারাদণ্ড

৩ মামলায় হাসিনার ২১ বছর কারাদণ্ড


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক তিন মামলায় ২১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত এ রায় দেন।


ভোটের সম্ভাব্য তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি

ভোটের সম্ভাব্য তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানে তিনটি তারিখ বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারিকে প্রাধান্য দিচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এর বাইরে ৫ ও ১২ ফেব্রুয়ারিকেও ইসি তাদের চিন্তায় রেখেছে। অবশ্য কমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি রোববারই হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। অন্য কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে ওই দিনই ভোট হবে। এছাড়া বিগত সময়ে সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন সাধারণ ছুটি থাকলেও এবার পরদিনও ছুটি রাখার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।

কমিশন সূত্র জানায়, পোস্টাল ভোটসহ বেশকিছু বিষয় বিবেচনায় রেখে এবার তফসিল ঘোষণা ও ভোটগ্রহণের মধ্যে বেশি সময় হাতে রাখতে চাইছে কমিশন। অন্যান্য সময় তফসিল থেকে ভোটগ্রহণে সর্বোচ্চ দেড় মাসের মতো ব্যবধান থাকলেও এবার প্রায় দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে ৭ অথবা ৮ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে তফসিল ঘোষণা করবেন।


সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এক অনুষ্ঠানে বলেন, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। একই দিনে ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদকে উদ্ধৃত করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল একই সঙ্গে ঘোষণা করা হবে।

Wednesday, November 26, 2025

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহন শেষে দেশে ফিরলেন জামায়াতের মহিলা নেত্রী

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহন শেষে দেশে ফিরলেন জামায়াতের মহিলা নেত্রী

 

তিস্তা নিউজ ডেস্কঃ পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগীয় সেক্রেটারি নুরুন্নিসা সিদ্দীকা।

৫ দিনের সফর শেষে ২৬ নভেম্বর (বুধবার) দুপুর ১২.৩০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সম্মেলনে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক ও মালয়েশিয়া সহ ১৭টি দেশ থেকে নারী প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশের নারী সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি নূরুন্নিসা সিদ্দীকা।

বিমান বন্দরে মহিলা বিভাগের সেক্রেটারিকে স্বাগত জানাতে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য নাজমুন নাহার নীলু, ঢাকা মহানগরী উত্তর মহিলা বিভাগীয় সেক্রেটারি সুফিয়া জামাল পিয়া, ঢাকা মহানগরী দক্ষিন মহিলা বিভাগীয় সেক্রেটারি আয়েশা পারভীন ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ইরানী আক্তার।

গত ২১ নভেম্বর শুক্রবার থেকে দুইদিনব্যাপী এই সম্মেলনে আরো যারা অংশ নিয়েছেন তারা হলেন, মালেশিয়া থেকে ফ্রিডম ফ্লোটেলায় অংশ নেয়া ডা. ফৌজিয়া হাসান, দাতো হাজ্জা মমতাজ, এমডি নাভি মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া থেকে ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টার লরেন বুথ। এছাড়া বাহরাইন, বসনিয়া,মন্টে নিগ্রো, তুর্কিয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৭টি দেশের সমাজ পরিবর্তনের অগ্রগামী ভূমিকায় থাকা নারী প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নেন। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আয়োজক মহিলা শাখা জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান।

Tuesday, November 25, 2025

শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাল জামায়াত

শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাল জামায়াত


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সই করা নোটিশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৫) নভেম্বর সন্ধ্যায় জামায়াতের ভেরিফায়েড পেজে নোটিশটি প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়, গত ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহজাহান চৌধুরী বলেন— নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়; বরং যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছেন, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, বসবে, গ্রেপ্তার করবে, মামলা করবে। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনের সর্বস্তরে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এমনকি কূটনৈতিক মহল থেকেও সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসে।

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারত্বের বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থি। দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শের বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার কারণে সংগঠনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইতোপূর্বে শাহজাহান চৌধুরীকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তার আচরণে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নির্দেশে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশে আরও বলা হয়, কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না— তা লিখিতভাবে জানাতে হবে আগামী ৭ দিনের মধ্যে। নির্ধারিত সময়ে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে উজাড় সন্দ্বীপ উপকূলীয় বনাঞ্চল

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে উজাড় সন্দ্বীপ উপকূলীয় বনাঞ্চল


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ সন্দ্বীপের উপকূলীয় বন কেটে সরকারি জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলমের বিরুদ্ধে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার অনুসারীদের নিয়ে মগধরা ইউনিয়নের এলাকাজুড়ে বিস্তৃত বন রাতের আঁধারে কেটে উজাড় করছেন তিনি।

আর নদী ও সড়ক পথে এসব বনের গাছ স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটাসহ হাতিয়া ও সুবর্ণচরে পাচার করে দিচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এতে দ্বীপ উপজেলার প্রধান উপকূল রক্ষা বাঁধ মারাত্মক হুমকিতে পড়ে নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি অর্থে লাগানো হাজার হাজার গাছ ধ্বংস হচ্ছে। হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মগধরা এলাকার বিস্তৃত বনটি ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর কোস্টাল গ্রীণবেল্ট প্রকল্পের মাধ্যমে বনায়ন করা হয়। যা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে সুরক্ষা দেবে। অভিযোগ ওঠেছে, বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলম প্রকাশ্যে বন উজাড় করলেও উপকূলীয় বন বিভাগ, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।


স্থানীয় বাসিন্দারাও ভয়ে মুখ খুলছেন না। স্থানীয়ভাবে প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগধরা ইউনিয়নে দ্বীপ সুরক্ষা বাঁধ সংলগ্ন বন বিভাগের সৃজিত বনের প্রায় ২০ একর জায়গার কেওড়া ও অন্যান্য ম্যানগ্রোভ প্রজাতির হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি দৃশ্যমান। কাটা গাছের গুঁড়ি ও ডালপালা বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়াও কাটা গাছের টুকরো কুড়াচ্ছেন স্থানীয় নারীরা।


স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফের অভিযোগ, গাছ কেটে বন উজাড়ের ঘটনায় বন বিভাগের কিছু অসাধু লোকজনের যোগসাজশ রয়েছে । আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরেও বন বিভাগের কেউ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেনি । এভাবে দীর্ঘদিন উপকূলীয় বনায়ন উজাড় হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।


সন্দ্বীপ চ্যানেল তীরবর্তী প্রতিরক্ষা-বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নদীভাঙনের ঝুঁকি ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাবে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বেড়িবাঁধসংলগ্ন বাসিন্দা হাসিনা বেগম বলেন, ‘গত এক বছর ধরে বন উজাড় করা হচ্ছে। কিন্তু গেল তিন সপ্তাহ ধরে বনে প্রতিদিন গাছ কাটা হচ্ছে। বেড়িবাঁধের এক চা দোকানদার আমার দেশকে জানান, একটি গ্রুপ রাত ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত, আরেকটি একটি গ্রুপ ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বন কাটছে। সবই হচ্ছে বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলমের নেতৃত্বে। তিনি প্রভাবশালী বিএনপি নেতা হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলম বলেন, ‘১৭ বছর বঞ্চিত থাকার পরেও নিজের জায়গার গাছ কাটতে অনুমতি নিতে হবে কেন? তিনি দাবি করে আশেপাশের ১০ কানি জমি তার লীজ নেওয়া। এছাড়া সেখানে তার মালিকানাধীন আরো জমি রয়েছে। তবে বন বিভাগ ইদ্রিসের এ দাবি মানতে নারাজ। সন্দ্বীপ উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘কেউ যদি বন বিভাগের সৃজিত বাগানের কোনো অংশ নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে।

তাকে প্রথমে লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর জমি জরিপ করে প্রক্রিয়া অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। অনুমতি ছাড়া বন বিভাগের গাছ কাটলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দণ্ড দেওয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকলেও গাছ কাটা যাবে না। যাচাই-বাছাই শেষে মালিকানা প্রমাণ হলে তবেই জমি বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।’


এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা আমার দেশকে জানান, বন বিভাগের তদন্তে ঘটনাটি প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ।

সীতাকুণ্ডে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া করলেন গ্রামবাসী

সীতাকুণ্ডে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া করলেন গ্রামবাসী


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া করলেন। জনরোষের শিকার হওয়া নেতারা হলেন কুমিরা ইউনিয়ন জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন ও পৌরসভা জামায়াত নেতা কমিশনার রেহান উদ্দিন।

পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে সমুদ্র উপকূলে আওয়ামী লীগ নেতা ও পলাতক আমি-ডামি নির্বাচনের সাবেক এমপি এস এম আল মামুনের চাচাতো ভাই সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর হোসেনের ক্রয় করা ১০০ একর কৃষি জমি সাগর থেকে বালু উত্তোলন করে ভরাট করতে গিয়ে গ্রামবাসীর রোষানলে পড়েছেন জামায়াত নেতারা। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রায় চার পাঁচশত গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া দিলে জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন ও কমিশনার রেহান উদ্দিনসহ অন্য জামায়াত নেতারাও পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় কয়েকজন জামায়াত নেতা আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। তবে এ ঘটনার দায় নিতে নারাজ জেলা জামায়াতে ইসলামী।


সোমবার ২৪ নভেম্বর দুপুরে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন ও কমিশনার রেহান উদ্দিনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক সৈয়দপুরের সমুদ্র উপকূলে কৃষি জমি ভরাটে যান। সেখানে প্রায় ১০০ একর কৃষি জমি ভরাটের কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তারা। তবে পরে স্থানীয় কৃষকদের প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন জামায়াত নেতারা। পালানোর সময় কয়েকজন জামায়াত নেতা আহত হয়েছে। কৃষকরা এলাকার মসজিদে গিয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কুমিরা ইউনিয়ন জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন ও পৌর জামায়াত রেহান উদ্দিন গেল বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা, আকিলপুর, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড এলাকায় শত শত ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করছেন। তাদের কাছে ড্রেজার থাকায় সমঝোতার মাধ্যমে সোমবার প্যাসিফিক জিন্সের মালিক ও এসএম আল মামুনের চাচাতো ভাই সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী সৈয়দপুরের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে পাঠান। এদিন দুপুরে আড়াইটায় তারা ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে উৎপাদিত ফসলের জমিতে বালু ভরাটের কাজ শুরু করেন জামায়াত নেতা রেহান উদ্দিন ও জসিম উদ্দিন। পরে সমুদ্র থেকে তোলার বালুর পাইপ লাগানোর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা জড়ো হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় তারা স্থাপিত বালুর পাইপ ফেলে দেয় এবং জামায়াত নেতা জসিম উদ্দিন ও রেহান উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তারা প্যাসিফিক জিন্সের মালিকের হয়ে বালু ভরাট শুরু করেছেন বলে জানান। পরে কৃষকরা জানিয়ে দেন ফসল থাকা অবস্থায় কোনো বালু ভরাট করা যাবে না। বালু ভরাট করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন দেখাতে হবে এবং তিন মাস আগে স্থানীয়দের জানাতে হবে। কোটি কোটি টাকার উৎপাদিত ফসল মাড়িয়ে বালু ভরাট চলবে না। একপর্যায়ে তারা বাড়াবাড়ি করলে স্থানীয়রা দুই জামায়াত নেতা জসিম ও রেহান উদ্দিনকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গণধোলাই দেন। পরে তারা কোনোমতে জনরোষ থেকে বেঁচে পালান।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের সাবেক আমি-ডামি নির্বাচনের এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুনের চাচাতো ভাই প্যাসিফিক জিন্সের এমডি আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মো. তানভীর কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পলাতক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের ১০০ একর কৃষি জমি ক্রয় করে নেন। ওই সময় স্থানীয়দের জিম্মি সরকারি প্রকল্পের কথা বলে জমিগুলো কৌশলে ক্রয় করে নেয়া হয়। সে সময় তাজুল ইসলাম নিজামী জমির দালালি করে বিপুল অর্থের মালিক বনে যান। স্থানীয়দের আপত্তির মুখে সে সময় ভরাট করতে না পারলেও সম্প্রতি আবারও ভরাট করতে মরিয়া হয়ে ওঠে প্যাসিফিক জিন্স। তারেই অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে দুই জামায়াত নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয় সৈয়দপুরে। সেখানে গিয়ে তারা কয়েকটি ড্রেজার সাগর পথে নিয়ে রাখেন সৈয়দপুর পয়েন্টে। কিন্তু পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড শুরু করলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পালিয়ে যান।

জানতে চাইলে ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মো. মামুন জানান, আমাদের জানা মতে, তাজুল ইসলাম নিজামী জমিগুলো কিনতে প্যাসিফিক জিন্সকে সহযোগিতা করেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তারা ভরাট করতে পারছিল না। আজ তারা ভরাট করতে এলে এলাকাবাসী মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাড়িয়েছে। আমাদের দাবি কোনো কৃষি জমি ভরাট করা যাবে না। এতে স্থানীয়দের জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

তিনি আরও বলেন, সব জমিতে ফসল ছিল। কোন জমিতে টমেটো, কোন জমিতে ফুলকপি, বরবটি, লাউ, শিম ইত্যাদি শীতকালীন সবজির এক রাজ্য সৈয়দপুর ইউনিয়ন। এখানকার কয়েকশত একর জমিতে সবজি চাষ হয়। পুরো এলাকায় আড়াইশোর বেশি কৃষক রয়েছে। এভাবে সবার উৎপাদিত সবজি যা সারা দেশের মানুষের রিজিক ধ্বংস করে বালু ভরাটের উদ্যোগ জাহেলিয়াতকেও হার মানায়।

সৈয়দপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মোহসেন আলী জানান, সোমবার দুপুরে জামায়াত নেতা জসিম ও রেহান উদ্দিন এলাকার কৃষি জমি ভরাটের জন্য সাগর থেকে বালু উত্তোলন করতে এলে আমাদের এলাকার মানুষ প্রতিরোধ করে। তিনি আরও বলেন, জামায়াত নেতা জসিমের সাথে কথা হলে তিনি আমাকে বলেন, আমি বিএনপির নেতাকর্মীদের বলতাম তারা যেন বাধা না দেয়। তারা নাকি কোম্পানির পক্ষ হয়ে কাজ করতেছে, সব দায়িত্ব নাকি তাদের। আমি বললাম আমাদের এলাকায় কোন বালু উত্তোলন ও কৃষি জমি ভরাট চলবে না। এটাই আমাদের সাফ কথা।

সৈয়দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আইনুল কামাল জানান, জমি ক্রয় করলেও প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই ২ মাস আগে কৃষকদের নোটিশ দিতে হবে। ফসলি জমিতে কীভাবে বালু ভরাট করে দেয় আমার বুঝে আসে না। এটি অমানবিক। ডিসির অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করতে হবে। তাছাড়া এতে আমাদের এলাকার বিরাট কৃষি জমি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সৈয়দপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আব্দুর রহমান বলেন, শতাধিক একর ফসলি জমিতে শীতকালীন সবজি নষ্ট করে কোনোভাবেই বালু ভরাট করতে পারবে না। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কৃষি জমি ভরাটের অনুমতি ইউএনও, এসি ল্যান্ড কীভাবে দিলেন। উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীলরা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, কৃষকের ফসলি জমি ভরাটের সাথে জামায়াতের কেউ জড়িত থাকলে তাদের চিহ্নিত করতে।


সীতাকুণ্ডের পরিবেশ কর্মী আরাফাত হোসেন জানান, কৃষি জমিতে শিল্পকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছ। অথচ পুরো উপজেলায় হাজার হাজার একর কৃষি জমি ধ্বংসের আয়োজন চলছে। এস আলম, ইনফিনিয়া, বসুন্ধরা এরা সীতাকুণ্ডকে শেষ করে দিয়েছে। এখন প্যাসিফিক শেষ প্যারেক ঠুকছে সীতাকুণ্ডের বুকে। এসব পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড উপজেলা প্রশাসন দেখেও চুপ। আগে ক্রয়কৃত জমিকে শিল্পে রূপ দিতে হবে। তাছাড়াও ঘনবসতিতে শিল্প করার অনুমতি আছে কিনা সরকারের তা নিশ্চিত করতে হবে। আগের মতোই গায়ের জোরে আওয়ামী স্টাইলে সব চলছে।

ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আবদুর রহমান জানান, আমাদের এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ জনপদ। কৃষিতে সমৃদ্ধ একটি এলাকা৷ এখানে শিল্পকারখানা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও এসিল্যান্ড আশরাফুল আলমকে ম্যানেজ করে সেসময় কিছু জমি শিল্প শ্রেণিতে পরিবর্তন করিয়ে নেয় প্যাসিফিক গ্রুপ। বর্তমানেও প্রশাসন তাদের হয়ে কাজ করছে। জামায়াতের কেউ জড়িত থাকলে আমাদের সংগঠন ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আলাদ্দিন সিকদার জানান, আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে এগুলো করা হচ্ছে। দল কোনো ব্যবসা করে না। জামায়াত এসবের সাথে জড়িত নয়।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মুজিবুর রহমান আমার দেশকে বলেন, কৃষকের শীতকালীন সবজির ওপর বালু ঢেলে ভরাটের চেষ্টা করলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসী তাদের প্রতিরোধ করেছে বলে আমি শুনেছি। তবে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে এখনো কেউ থানায় মামলা করতে আসে নাই।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলন করে কৃষি জমি ভরাটের কোনো অনুমোদন আমরা দিই নাই। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ।