মাহমুদ আল হাছান, তিস্তা নিউজ ঃ
আদদিবাসী ইস্যু নিয়ে আমাদের চিন্তার বৈকল্য ও নির্লিপ্ততা অচিরেই এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
অত্যান্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে আজ অনেকেই না বুঝেই আদিবাসী আদিবাসী বলে জিগির তুলছে। জানার অভাবে তারা বুঝতেই পারছে না- বিষয়টা আসলে কি! আজও যে পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে টিকে আছে এর পিছনে প্রধান অবদান প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।
স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবুর রহমান সন্তু লারমার ভাইকে ডেকে বললেন- এখন থেকে তোমরা বাঙালি হয়ে যাও! সে বললো, আমি তো চাকমা! বাঙালি কিভাবে হবো! শেখ মুজিব ঝারি দিয়া তাকে পাঠায় দিলেন- যাও, যা বলছি তাই হবে, সবাই বাঙালি। সন্তু লারমা পরবর্তীতে ভারতের ইন্ধনে সশস্ত্র বিদ্রোহ করলো! শুরু হলো রক্তক্ষয়ী সং*ঘর্ষ।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সবাইকে বাংলাদেশী হিসাবে ঘোষণা দিলেন। এরপর নজর দিলেন তিন পার্বত্য জেলার দিকে। সেখানকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর আলাদা পরিচয় দেওয়ার সুযোগ দিলেন। তাদের সাথে মুল ভুখন্ডের মানুষের ভাবের আদানপ্রদানের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলেন। তিনি খেয়াল করে দেখলেন দেশের প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন জেলার মানুষের বসবাস৷ কোনো জেলা শুধুমাত্র সেই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বসবাস করেন না। ধরুন ঢাকা শহর শুধু ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের আবাসস্থল না। এখানে বিভিন্ন জেলার মানুষ জমি কিনে বসতি স্থাপন করে ঢাকায় স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছে। এমন প্রতিটি জেলাতেই ঘটেছে। শুধুমাত্র তিন পার্বত্য জেলাতে খুব অল্প সংখ্যক বাঙালি স্থায়ীভাবে বসবাস করে। এখানকার ভূপ্রকৃতির জন্য সমতলের কেউ জমি কিনে বসতি স্থাপনে আগ্রহী নয়। তিনি ভেবে দেখলেন এই তিন পার্বত্য জেলায় অন্যান্য জেলার মতো বহু এলাকার মানুষের সমাগম না হলে এক সময় ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নিবে। শেখ মুজিবের মৃত্যুর পরে ভারত সন্তু লারমাকে দিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়। এই এলাকা টিকিয়ে রাখতে হলে এখানে বাঙালিদের সমাগম ঘটাতে হবে৷ পাহাড়ি আর সমতলের বাসিন্দা একসাথে বসবাস করলে বাংলাদেশ শক্তিশালী হবে।
তিনি ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের কেউ যদি পাহাড়ে বসবাস করতে চায় তাদেরকে ফ্রি সরকারি খাসজমিতে বাড়িঘর করে দেওয়া হবে, চাষাবাদের জন্য জমি দেওয়া হবে। এভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লাখ লাখ গরীব মানুষ সেখানে বসতি স্থাপণে রাজি হয়। এভাবে সেখানে একটা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পাহাড়ি এবং বাঙালি এখন সমান সমান, অনেক জেলাতে বাঙালিই বেশি। এটা করতে না পারলে অনেক আগেই এই অঞ্চল আমাদের হাত থেকে ছুটে যেতো।
এই তিন পার্বত্য অঞ্চল টিকিয়ে রাখতে বিএনপির অবদান সবচেয়ে বেশি। এই অঞ্চল নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। সর্বশেষ ষড়যন্ত্র হলো 'আদিবাসী' বয়ান। এটা দেশ ভাগের নতুন ষড়যন্ত্র। তারা তিন পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে 'জুম্মল্যান্ড' নামে নতুন দেশ বানাতে চায়। তাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো এখনকার বিএনপি জামায়াত সহ সব রাজনৈতিক দলকে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।
সন্তু লারমা যে শান্তি চুক্তি করেছিল সেখানে নিজেদের পরিচয় দিয়েছিল- ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী/ উপজাতি। আজ তারা কেনো আদিবাসী হতে চায়? কারন জাতিসংঘের নতুন এক আইনে আদিবাসী হলে তাদেরকে স্বাধীনতা দিতে হবে৷ এভাবে পুর্ব তিমুর ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগ সরকারও কঠিনভাবে আদিবাসী ইস্যুকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। সরকারি আদেশ জারি করেছিলো যেনো কেউ তাদেরকে আদিবাসী বলে সম্বোধন না করে। সেখানে এখন অনেকেই না বুঝেই দেশ বিরোধী সংগঠন বামদের সাথে মিলে আদিবাসী বলে ফেলছে!
ধারণা করা হচ্ছে ভারত প্রযোজিত সংখ্যালঘু কার্ডের পরেই পার্বত্য কার্ড প্রয়োগ সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সংখ্যালঘু কার্ড পরাজিত হওয়ার পরে এখন বড় আকারে আসবে 'পার্বত্য কার্ড'। আদিবাসী স্বীকৃতি নিয়ে বিশাল আকার ধারণ করবে। তাই এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে এখনই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, সবাইকে একসাথে প্রতিবাদমুখর হওয়া জরুরী।