Friday, January 10, 2025

১৫ জানুয়ারির মধ্যে আসছে না অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র

 
মাহফুজ আলম




তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে না। বরং সরকার এ প্রক্রিয়াকে ফ্যাসিলেটেড (সহায়তা) করবে। ঘোষণা আসবে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল এবং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে। এক্ষেত্রে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এটা শেষ হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন। তার মতে, ‘জুলাই গণঅভু্যত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়টি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হবে। প্রধান উপদষ্টোর প্রেস উইং এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
প্রধান উপদষ্টোর প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম এবং ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৫ জানুয়ারি মধ্যে ঘোষণাপত্র জারির দাবি থাকলেও এক্ষেত্রে আর একটু সময় লাগবে। শফিকুল আলম বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে।

প্রসঙ্গত, ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। সেখানে ১৯৭২ সালের সংবিধান ছুড়ে ফেলে জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সরকারের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ হয়। ওই সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে ওই সমাবেশ থেকে ঘোষণাপত্র জারির জন্য সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।    

বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্র নিয়ে কথা আসছে। এটি শিক্ষার্থীদের দাবি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং এর বাইরে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ঘোষণাপত্র তৈরি হবে। সেখানে সবার কথা শোনা হবে। পরবর্তী সময়ে কতটুকু সংস্কার করা হবে সেটি বিবেচনায় নেওয়া হবে। তিনি সংস্কারের মধ্যে সংবিধান সংস্কার বা বাতিলের প্রশ্ন আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করা হবে। মাহফুজ বলেন, ‘গণ-অভু্যত্থানে অংশগ্রহণকারী সব সংগঠনের সঙ্গে আমরা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে বসব। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা শেষ হবে।'
তিনি বলেন, ‘ঘোষণাপত্রের প্রস্তাব শিক্ষার্থীরা দিয়েছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না। সরকার এটার প্রক্রিয়াকে ফ্যাসিলেটেড করবে। অর্থাত্ সরকার নিজে বানিয়ে কোনো ঘোষণাপত্র দেবে না। বরং সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাটি ঘোষণা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে উপদষ্টো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছিলেন ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র দেবেন। পরে সরকার বুঝতে পারে, এটা শুধু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এলে দেশের ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তখন সরকার দায়িত্ব নেয়।'

আশা করি সরকার শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঘোষণাপত্র তৈরি করবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে সদ্ধিান্ত জানানো যাবে।

মাহফুজ আলম বলেন, ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করা। কিন্তু এই সময় কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-অভু্যত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়টি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হবে। তবে সবার সম্মতিতে ঘোষণাপত্র হলে, তা দেশের জন্য ভালো হবে।'

শেয়ার করুন