Friday, February 14, 2025

একযুগ পর ইসির সঙ্গে বৈঠক জামায়াতের

 

তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ নির্বাচনি প্রক্রিয়ার জরুরি সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচন চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে দলটি জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয় (নো ইলেকশন উইথআউট রিফর্মস)। তবে সব সংস্কার নয়, শুধু নির্বাচন সংক্রান্ত অতি জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে।রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে জামায়াত নেতারা প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন। একযুগ পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তারা বৈঠক করলেন। সর্বশেষ ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ইসির সঙ্গে জামায়াতের নেতারা বৈঠক করেছিলেন।

বৈঠক সম্পর্কে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার ব্যাপারে লিখিত আকারে আমাদের বক্তব্য পেশ করেছি। ২৩টি বিষয়ে সুপারিশ করেছি। ইসিও কিছু বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছে। কিছু বিষয়ে কমিশন প্রাসঙ্গিক মতামত দিয়েছেন। ইসির সক্ষমতা, সীমাবদ্ধতা, সমস্যা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয় (নো ইলেকশন উইথআউট রিফর্মস)। নির্বাচনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশি্লষ্ট বিষয়গুলো সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না, অবাধ হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে যে সংস্কারটুকু নূ্যনতম প্রয়োজন এবং যতটুকু যেৌক্তিক সময় প্রয়োজন জামায়াতে ইসলামী সে সময় দিতে প্রস্তুত। দিন, মাস, ক্ষণ আমরা বেঁধে দিইনি। সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য ‘যৌক্তিক সময়’ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বরাবরই আগের অবস্থানে রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমরা বলেছি সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারেন। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মাস আমাদের কাছে ফ্যাক্টর নয়।

জামায়াত নেতা পরওয়ার বলেন, বিশ্বের ৬০টি দেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হারে (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন-পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। দেশে এ ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ ব্যবস্থা দরকার বলে আমরা সুপারিশ করেছি। তিনি আরও বলেন, অনিয়মের জন্য ভোট আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ বাতিলের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও সুপারিশ করেছি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ৯১ (এ) অনুচ্ছে পুনর্বহালের দাবি করা হয়েছে। প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, সরকারি চাকরি থেকে অবসরের তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচন নয় এমন বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, নিবন্ধন আইনে কঠিন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এ শর্তপূরণ করে (নিবন্ধন করা) রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এ আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা বাতিল করতে হবে। কারণ দল ও রাজনীতি করার অধিকার সবার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিবন্ধনের কোনো প্রয়োজনই নেই। দল হলেই নির্বাচন করবে। ২০০৮ সালের আগে নিবন্ধন আইন ছিল না। বৈঠকে জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্তের কাজ চলছে।

মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, প্রকাশনা ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন সরকার, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও মজলিশে শূরার সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসূফ আলী, মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন।

সূত্র ঃ দৈনিক যুগান্তর 


শেয়ার করুন