Friday, February 14, 2025

আয়নাঘরের’ সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি

 

তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ কুখ্যাত ‘আয়নাঘরের’ অনেক চিহ্ন পরিবর্তন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা বলেন, এই আয়নাঘরের সঙ্গে জড়িত ছোট-বড় সব পর্যায়ের হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুধু ১৫ থেকে ২০ জন কর্মকর্তাকে দায়ী করাই যথেষ্ট নয়, বরং ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার বিভিন্ন বাহিনীর দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলেও দাবি জানান তারা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব দাবি জানান। এ সময় বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আয়নাঘরের কাঠামো পরিবর্তনের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, কারা এর সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করতে হবে।

‘জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ-বিচার প্রক্রিয়া : আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক ও নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনিম খলিল, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেলিন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার বিভিন্ন বাহিনীর হাতে গুম হওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগীর শিশুসন্তান, স্ত্রী, বোনসহ কয়েকজন স্বজন বক্তব্য দেন। গুম হওয়া এক ভুক্তভোগীও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে স্বাগত জানান সাংবাদিক তাসনিম খলিল। তিনি বলেন, আরো বিশদ তদন্তের স্বার্থে জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ জানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো দরকার।

নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনিম খলিল ডিজিএফআই হেড কোয়ার্টার, র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২-এর আয়নাঘরের আলোকচিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন। আলোকচিত্র বিশ্লেষণ করে তিনি দেখান, কীভাবে কোন কোন স্থানে আয়নাঘরগুলোর বীভৎসতা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আড়াই ফুট চওড়া একটি কবরের মতো ঘরে মানুষকে নির্যাতন করা হতো। মাসের পর মাস কবরের মতো এসব রুমে দাঁড়িয়ে থাকা লাগত। শোয়া তো দূরে থাক, বসারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এমন বীভৎসতারে চিত্র দেখে উপস্থিত শ্রোতারা রীতিমতো হতবাক হন।

আয়না ঘর থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ ফেরেননি। এসব নিখোঁজ মানুষের বাচ্চারা তাদের বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানায় সরকারের কাছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের বিভিন্ন সময়ে তাদের বাবাদের শেখ হাসিনার ঘাতকরা তুলে নিয়ে যায়। এক যুগের বেশি সময় পার হলেও এখনো কোনো হদিস নেই এসব নিখোঁজ মানুষের। শিশুদের কান্নায় এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনেককে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।


শেয়ার করুন