উপজেলা প্রতিনিধি (ডিমলা) ঃ নীলফামারীর ডিমলায় সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনও হিমাগার (কোল্ড স্টোরেজ) না থাকায় ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন না কৃষক। এ ছাড়াও বাজারে দামও কম। এ জন্য ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে আলু। ফলে আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে চাষিরা। আলু এখন কৃষকের গলার কাঁটা।
উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের খড়িবাড়ি গ্রামের আলু চাষি জসিম উদ্দিন, আব্দুল মোত্তালেব জানান, হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণের অভাবে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে কয়েক হাজার মণ আলু। হিমাগার নির্মাণ করা হলে কৃষকদের জন্য সুবিধা হবে আলু সংরক্ষণে। ক্রাইসিস মুহূর্তে হিমাগারের আলু ভোক্তাদের অনেক উপকারে আসে এবং কম দামে কিনতে পারে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমবে। ফলে ভালো দামও পাবেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলার পাঁচ উপজেলায় ১১টি হিমাগার রয়েছে। যার ধারণক্ষমতা ৮২ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। এ বছর কৃষকদের আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৫ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন। অপরদিকে, জেলায় আলু চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলায় আলুর চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। এতে সম্ভাব্য উৎপাদন হবে ৩৫ হাজার থেকে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। তবে ওই উপজেলায় একটি হিমাগারও নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলুর ফলন ভালো হলেও এখন সংরক্ষণের অভাবে আলু ক্ষেতে কম দামে কৃষকদের বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণের অভাবে অনেকেই আলু তুলছেন না ক্ষেত থেকে। এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েক হাজার মণ আলু। এ সমস্যা একটি বড় সমস্যা মনে করছে এলাকাবাসী।
উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের আলুচাষি বাবুল ইসলাম বলেন, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করে ফলন পেয়েছিলেন ৬২০ মণ। এখানে হিমাগার না থাকায় আলু সংরক্ষণের অভাবে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাদ্য হয়েছি। পার্শ্ববর্তী উপজেলায় হিমাগারে কিছু আলু রেখেছি। ফলে পরিবহন ও শ্রমিকের খরচ দিয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে।
নাউতারা ইউনিয়নের আলু চাষি মিলন মিয়া, ছবেত আলী, আমিনুর রহমান বলেন, বাজারে এখন আলু সস্তা। তবে এই আলু রমজানের শেষ দিকে কোরবানির আগে দিগুণ দামে বিক্রি করা যেত। কিন্তু সংরক্ষণের উপায় নাই। জমিতে যে আলু রয়েছে, সেগুলো এখনও উত্তোলন করা হয়নি। কারণ আলু ওঠালে খরচের টাকা উঠবে না। এখন বিক্রি করলে লাভবান হবেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। আবার সংরক্ষণও করতে পারছি না। হিমাগার না থাকায় আলু চাষ করে সংকটে পড়েছি।