Saturday, March 8, 2025

রাজশাহীতে ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ আওয়ামী লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু

রাজশাহীতে ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ আওয়ামী লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু


তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ রাজশাহী শহরের একটি বহুতল ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ হয়েছেন মোস্তাক আহমেদ বাবু ওরফে ব্যাটারি বাবু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় তার নাম ছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তাকে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে দেখা গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘ তল্লাশী অভিযানেও তাকে ওই ভবনে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে ছাত্র-জনতা খবর পায় যে, ব্যাটারি বাবু শহরের কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে উঠেছেন। এরপর ভবনটি ঘেরাও করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে আসে ডিবি পুলিশ, ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) এবং সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরাও। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি ঘিরে রেখে ভেতরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাকে খুঁজে পায়নি।

এদিকে ব্যাটারি বাবুর খোঁজ না পাওয়ায় ছাত্র-জনতার মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রাতে ভবনের সামনে এক নারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘আমরা তাকে ঢুকতে দেখেছি। তারপর কিভাবে তিনি হাওয়া হয়ে গেলেন। তা বুঝতে পারছি না।’

এক শিক্ষার্থী জানান, ফ্ল্যাটের সামনে গেলে তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন, তাকে গ্রেপ্তার না করানোর জন্য। কিন্তু তারা টাকা না নিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ‘রাত ৩টা পর্যন্ত অভিযান চলেছে। কিন্তু আসামিকে ওই ভবনে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

জানা যায়, মোস্তাক আহমেদ বাবু শহরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। এছাড়া, ব্যাটারি বাবু ২০০৩ সালে ক্রিকেটার জিকো হত্যার মামলার আসামি ছিলেন। ওই মামলার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে যান এবং ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটুর ছত্রছায়ায় রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। মোস্তাক আহমেদ বাবু রাজশাহীতে একটি ব্যাটারি দোকান পরিচালনা করেন, নাম ‘সাব্বির আয়রন স্টোর’। এ কারণে তিনি ‘ব্যাটারি বাবু’ হিসেবে পরিচিত। ব্যাটারির ব্যবসা ছোট হলেও তিনি অত্যন্ত বিলাসী জীবনযাপন করেন। তার বিরুদ্ধে আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।

শেয়ার করুন