তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ সম্প্রতি তৃতীয় মাত্রার সঞ্চালক ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডির নির্বাহী পরিচালক সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের করা একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। ভিডিওতে তিনি বলেন, রাজধানীর একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ‘ধমকের’ সুরে কথা বলেছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এমনকি তাদের নানাভাবে হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়ার ‘হুমকি’ পর্যন্ত দিয়েছেন।
সোমবার এ নিয়ে কথা বলেছেন হাসনাত।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত বলেন, ‘বাস্তবে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার এই অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য ও জঘন্য মিথ্যাচারের নামান্তর।’
হাসনাত বলেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় গতকাল সকালে। যখন ঢাকাস্থ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একটি বাচ্চা মারা যায়।
মৃত্যুর আগে চিকিৎসা বাবদ দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা টাকা বিল এসেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করে নিহতের পরিবার। বকেয়া থাকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এই টাকা বকেয়া রেখে মৃত বাচ্চার লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তারা জানায়, সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করা ব্যতীত লাশ হস্তান্তরের কোনো সুযোগ আমাদের নেই।
‘পরবর্তীতে শিশুটির পরিবার ফোনে আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি মৃতের পরিবারের মোবাইল থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এতটুকুই বলতে চেষ্টা করি যে, টাকা কমানো বা মওকুফ করার এখতিয়ার সম্পূর্ণ আপনাদের। আমি শুধু অনুরোধ করতে পারি। উল্লেখ্য, দিশেহারা নিহতের পরিবার কর্তৃপক্ষের কাছে বিল মওকুফের ব্যাপারে অনুরোধ করার সময়ে, সেখানে হাসপাতালের একজন ডেপুটি ডিরেক্টর উপস্থিত থাকলেও তিনি কোনোরকম সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানান।
তার সাথে বার বার কথা বলতে চাইলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।’
তিনি বলেন, কুমিল্লায় অবস্থান করায় সেখানে সশরীরে গিয়ে সহযোগিতা করার সুযোগ আমার ছিল না। সেজন্য আমার পরিচিত দুইজন ভাইকে আমি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলি। যাতে তারা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে লাশ হস্তান্তরের ব্যাপারে নিহতের পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারেন।
হাসনাত বলেন, ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য আমি আমার পরিচিত একাধিক সংবাদকর্মীকে ওই হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। দৈনিক মানবজমিন ও যমুনা টেলিভিশনের দুইজন প্রতিনিধিকে আমি নিজে ফোন করে এই বিষয়ে অবহিত করি। তৎক্ষণাৎ তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে। অপেক্ষার কথা বলে পরবর্তীতে আর কেউই তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি, কথাও বলেনি!
‘এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে একজন ব্রিগেডিয়ার আমাকে ফোন করলে আমি তাকে এভাবেই বলি যে, টাকা কমানোর ব্যাপারে আমি মানবিক জায়গা থেকে আপনাদের কাছে অনুরোধ করতে পারি কেবল। সে অনুরোধ আপনারা বিবেচনা করবেন কি করবেন না তা একান্তই আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক পলিসিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনারা তো আমাদের অনুরোধটাই শুনছেন না। দায়িত্বরত কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। এরকম অসহযোগিতামূলক আচরণ কি একটা নিহতের পরিবার ডিজার্ভ করে? স্রেফ টাকার জন্য একটা বাচ্চা শিশুর লাশ আপনারা আটকে রাখছেন, তার পরিবারের অনুরোধটুকু পর্যন্ত শুনছেন না, এটা কোন ধরণের পেশাদার আচরণের উদাহরণ? ফ্যাসিবাদ পরবর্তী বাংলাদেশে একজন নিহতের অসহায় পরিবারের সাথে এই ধরণের অমানবিক আচরণ আদৌ গ্রহণযোগ্য কিনা? এসব শুনে, তিনি নিজে ব্যাপারটি মীমাংসা করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, এই বিষয়টিকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘আমার কথা না শুনলে লোক পাঠিয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করা হবে’ বলে উপস্থাপন করা হয়। যা স্পষ্টত অন্যায় এবং চরম মিথ্যাচার।
সূত্রঃ দৈনিক কালেরকণ্ঠ।