Sunday, March 9, 2025

তারাবীহ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ আমল



রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল তারাবীর নামায। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে সওয়াবের আশায় কিয়ামে রমজান আদায় করবে আল্লাহ তাআলা তার পেছনের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। (সহিহ বুখারী-২০০৯) আরো একাধিক হাদিসে কিয়ামে রমজান তথা তারাবীর নামাযের কথা বর্ণিত হয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম থেকে নিয়ে এ সুন্নাতের ওপর আজও মুসলিম উম্মাহর আমল চলে আসছে। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে মুসলিম জনপদগুলোতে রমজান মাসে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তারাবী আদায় করা হচ্ছে। রাসূলের সুন্নাহ অনুসারী কোনো মুসলিম কখনো এ আমলকে গুরুত্বহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি।

কিন্তু আজকাল দ্বীনের অন্যান্য বিষয়ের মতো অনেকের মধ্যে এ মহান আমলের প্রতিও গুরুত্বহীনতা ও অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। কোনো কোনো ভাইকে দেখা যায়, নিজের মনমতো যেদিন যতো রাকাত ইচ্ছা পড়ে নেয়। কেউ আবার জামাতে শরীক না হয়ে একা একা কিছু রাকাত পড়ে নেয়, কেউ তো মোটেই পড়ে না। অথচ তারাবীর নামায সুন্নাতে মুআক্কাদা।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর রমজানের সিয়াম ফরয করেছেন এবং আমি (আল্লাহ তাআলার হুকুমে) কিয়ামে রমজান (অর্থাৎ তারাবীর নামায)-এর বিধান জারি করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের উদ্দেশে রমজানের রোযা রাখবে এবং রাতে নামায (তারাবী) পড়বে সে যাবতীয় গুনাহ থেকে নবজাতক শিশুর মতো পবিত্র হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমাদ-১৬৬০)

অত্যন্ত সওয়াবের এ আমলে নিজের খেয়ালখুশি মতো কম করা মূলত নামাযের প্রতিই অবহেলা-অনাগ্রহের প্রকাশ এবং এর মন্দ প্রভাবও সুদূরপ্রসারী। মুসলিম ঐতিহ্যের এ মহান আমলকে কম গুরুত্বের মনে করে এ ব্যাপারে অবহেলা করতে থাকলে আল্লাহ না করুন, আমাদের কুপ্রবৃত্তি ধীরে ধীরে আমাদেরকে এ সুন্নাত থেকে পুরোপুরিই উদাসীন করে ফেলতে পারে।

মনে রাখা দরকার, আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার নেক আমলের সওয়াব এমনিতেই বহু গুণে বাড়িয়ে দেন। রমজান তো আরো মর্যাদাপূর্ণ মাস। এ মাসের ফযীলত ও আমলের সওয়াবও অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। কাজেই আমরা আল্লাহ প্রদত্ত সওয়াব অর্জনের এ সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাই এবং এর যথাযথ কদর করি।

তারাবীর নামাযের ব্যাপারে আমাদের কোনো কোনো ভাইয়ের উদাসীনতার একটা বড় কারণ হলো, তারাবীর নামাযের বিধান এবং এর রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিগত শতাব্দী থেকে কোনো কোনো মহল কর্তৃক বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপপ্রয়াস। অথচ তাদের বক্তব্যের কোনো দালীলিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। তারা যেসব বর্ণনা দ্বারা দলীল দিতে চেষ্টা করে, তা তাদের বোঝার ভুল। যা উলামায়ে উম্মত বিস্তারিতভাবে খ-ন করেছেন। আর ঐতিহাসিকভাবে তো তাদের কোনোই দলীল-প্রমাণ নেই। সে আলোচনা এখানে বাঞ্ছনীয় নয়। মূলত এক্ষেত্রে অযথা বাড়াবাড়িই তাদের মতবিরোধের মূল কারণ।


শেয়ার করুন