Tuesday, March 4, 2025

রমজান মাস ইবাদতের বসন্ত কাল

 

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : রোজাদারের জন্য দুটি বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময়। অপরটি হলো যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে (আর তিনি তাকে বিশাল পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করবেন)। (সহিহ মুসলিম-১১৫১) রোজাদার ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট এতটাই মহব্বতের পাত্র যে, সে কিছু চাইলে আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না। নবীজী বলেন : তিন ব্যক্তির দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না : এক. রোজাদারের দুআ ইফতার পর্যন্ত। দুই. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুআ। তিন. মজলুমের দুআ। আল্লাহ এ দুআকে মেঘমালার উপরে নিয়ে যান। এর জন্য আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেন। রব বলেন, আমার ইযযতের কসম, বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করব। (জামে তিরমিজি-৩৫৯৮)


কিয়ামতের দিন রোজাদারের জন্য রোজা নিজে সুপারিশ করবে। হাদিসে এসেছে : কিয়ামতের দিন সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ওগো রব! দিবসে আমি তাকে পানাহার ও (বৈধ) জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, রাতে আমি তাকে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। অতঃপর তাদের সুপারিশ কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ-৬৬২৬; মাজমাউয যাওয়াইদ-৫০৮১)

রোজাদারের জন্য থাকবে জান্নাতের বিশেষ তোরণ। রোজাদার হলেন আল্লাহ তাআলার বিশেষ মেহমান। জান্নাতে প্রবেশের জন্য তার সৌজন্যে বিশেষ তোরণের ব্যবস্থা থাকবে। নবীজী বলেন : জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন তা দিয়ে রোজাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, রোজাদাররা কোথায়?


তখন তারা আসবে। তারা ছাড়া তা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করবে না। রোজাদাররা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপর আর কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না। (সহিহ বুখারি-১৮৯৬; সহিহ মুসলিম-১১৫২) সাহরি খাই, বরকত লাভ করি। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : তোমরা সাহরি করো। কেননা সাহরির খাবারে বরকত রয়েছে। (সহিহ বুখারি-১৯২৩, সহিহ মুসলিম-১০৯৫)


শেষ ওয়াক্তে সাহরি গ্রহণ করা উত্তম। সাহরি করা যেমন মুস্তাহাব তেমনি তা ওয়াক্তের শেষ দিকে করাও উত্তম। অর্থাৎ সতর্কতামূলক সময় হাতে রেখে সুবহে সাদিকের পূর্ব-নিকটবর্তী সময়ে সাহরি করা ভালো। নবীজী বলেন : আমরা নবীগণ এ মর্মে আদিষ্ট হয়েছি যে, সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করব এবং শেষ ওয়াক্তে সাহরি গ্রহণ করব। (আলমুজামুল আওসাত, তবারানি, হাদিস-১৮৮৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস-৪৮৮০)।

সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করি। এতক্ষণ আল্লাহর হুকুম ছিল খাবে না। এখন সূর্য অস্ত গিয়েছে। এখন তাঁর হুকুম ইফতার করা। তাই আর দেরি নয়, জলদি জলদি ইফতার শুরু করে দিন। পূর্বে উল্লেখ হয়েছে দ্রুত ইফতার করা ছিল নবীগণের বৈশিষ্ট্য। সাহাবায়ে কেরামও দ্রুত ইফতার করতেন। নবী কারিম (সা.) বলেন : মানুষ ততদিন খায়ের ও কল্যাণের মাঝে থাকবে, যতদিন তারা সময় হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ইফতার করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস-১৯৫৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস-১০৯৮)।


শেয়ার করুন